สล็อต สล็อต
ব্যাংকের বেশির ভাগ অর্থ সরকারের কোষাগারে ব্যাংকের বেশির ভাগ অর্থ সরকারের কোষাগারে – banglar doot
  • শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বিরল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মরহুম তারিকুল ইসলাম এর কবর জিয়ারত ও পরিবারের সার্বিক অবস্থার খোঁজ খবর নিলেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ সুন্দরবনে অভয়াশ্রম কমানোর দাবীতে জেলেদের মানববন্ধন ঝিনাইদহে বাস-অটোভ্যান সংঘর্ষে নিহত ২, আহত আরও ২ কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার পৌর এলাকার প্রতিদিনের সমস্যা এখন প্রধান সড়ক । দেবিদ্বারে ৪ কিলোমিটার সড়ক এখন মরণফাঁদ এমপি প্রার্থী মাওলানা বদরুজ্জামান- অমুসলিম নাগরিক রাষ্ট্রের কাছে আমানত তদন্তে শেষেই নেয়া হবে ব্যবস্থা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে – ডিআইজি আমিনুল ইসলাম জনগণ ভোট দিলে গড়বো ন্যায়ভিত্তিক ইনসাফের বাংলাদেশ এক কিংবদন্তী দানবীরের গল্প রনদা প্রসাদ সাহা হরিপুরে বিএনপি নেতা বহিষ্কার

ব্যাংকের বেশির ভাগ অর্থ সরকারের কোষাগারে

Reporter Name / ১৯৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

খবর জনতা ডেস্ক:

ব্যাংকের মোট তরল সম্পদের দুই-তৃতীয়াংশই এখন সরকারের কোষাগারে আটকে রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে গত জানুয়ারি শেষে ব্যাংকের মোট তরল সম্পদ রয়েছে চার লাখ ২৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের কোষাগারেই রয়েছে তিন লাখ ১০ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। এদিকে, মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার কারণে মানুষ আর আগের মতো সঞ্চয় করতে পারছেন না। বরং সঞ্চিত বিনিয়োগই অনেকেই ভেঙে খাচ্ছেন। এ কারণে ব্যাংকগুলো কাক্সিক্ষত হারে আমানত সংগ্রহ করতে পারছে না। অপরদিকে, ঋণও আদায় হচ্ছে না কাক্সিক্ষত হারে। এমনি পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা ব্যাংকগুলোর টাকার সঙ্কট দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। আর তারই নমুনা হলো ঈদের পর দুই কার্যদিবসে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করেছে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক খোলার দিনই অর্থাৎ ১৫ এপ্রিলে ধার করেছে ১৯ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, ব্যাংক খাতে কোর ডিপোজিট বাড়ছে না। আবার মূল্যস্ফীতির কারণে গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও কমে যাচ্ছে। সবমিলেই নগদ অর্থের সঙ্কট বেড়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, ঈদের আগে গ্রাহকরা নিজেদের প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে বাড়তি অর্থ উত্তোলন করেন। আর এ কারণে ব্যাংকে নগদ টাকার সঙ্কট দেখা দেয়। আর এ সঙ্কট মেটাতে ব্যাংকগুলো কলমানি মার্কেট থেকে উচ্চ সুদে ধার নেয়। আবার বাজারে কাক্সিক্ষত হারে টাকা পাওয়া না গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার নেয়। ঈদের পরে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের চাপ কম থাকে। তাই ঈদের পর ব্যাংকে তেমন তারল্য সঙ্কট থাকে না। কিন্তু এবার ঠিক তার উল্টো। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ঈদের ছুটির পর প্রথম কার্যদিবসে অর্থাৎ গত ১৫ এপ্রিলে টাকার সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করেছে ১৯ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। আর ১৬ এপ্রিল ধার করেছে ১৬ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা। এ থেকেই অনুমান করা যায়, ব্যাংকিং খাতে টাকার সঙ্কটের প্রকৃত অবস্থা কতটা ভয়াবহ।

ব্যাংকারদের শীর্ষ সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়্যাল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই টাকার সঙ্কট চলছে। এর অন্যতম কারণ হলো মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ আর আগের মতো সঞ্চয় করতে পারছেন না। বরং বিদ্যমান সঞ্চয় অনেকেই ভেঙে খাচ্ছেন। এ কারণে কোর ডিপোজিট বাড়ছে না। অপরদিকে, ব্যাংকগুলো দীর্ঘ দিন ধরেই ডলার সঙ্কটের কারণে বাড়তি দামে ডলার কিনছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ব্যাংক ডলার কিনছে। বিপরীতে মার্কেট থেকে টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে যাচ্ছে। অপরদিকে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কোনো কোনো ব্যাংক বেশি হারে সরকারি ট্রেজারি বিল বন্ডে বিনিয়োগ করেছিল। সবমিলেই টাকার তারল্য সঙ্কট কাটছে না। আর এ কারণেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে চলছে অনেক ব্যাংক।

এ দিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত হিসেবে ব্যাংক ঋণের সুদের একক হার তুলে দিয়ে নতুন মানদণ্ড চালু করা হয়। ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদহার যেটা হবে তাই সুদহার নির্ধারণের প্রাথমিক মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়। আর এ মানদণ্ডকে সংক্ষেপে স্মার্ট বলা হয়। এই স্মার্টের সাথে সাড়ে তিন শতাংশ সুদহার যুক্ত করে নতুন সুদহার নির্ধারণ করা হয়। জানা গেছে, প্রতি মাসেই এ সুদহার বেড়ে যাচ্ছে। মাত্র ৯ মাসের ব্যবধানে ব্যাংক ঋণের সুদহার প্রায় ৫ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, এ কারণেও ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা কমে গেছে শিল্প উদ্যোক্তা ও আবাসন খাতের গ্রাহকদের। আর এ কারণে গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা ধরে রাখতে ৯ মাস আগের হারেই ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এ জন্য বিদ্যমান নীতিমালা শিথিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলার জারি করেছে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, এক শ্রেণীর গ্রাহক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আর পরিশোধ করছেন না। এতে ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকের মুনাফা দিয়ে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। এতে কমে যাচ্ছে মুনাফার পরিমাণ। এ কারণে ব্যাংকগুলো ব্যয় কমাতে যেটুকু কোর ডিপোজিট আহরণ করছে তার একটি অংশ সরকারের ট্রেজারি বিল বন্ডে বিনিয়োগ করছে। এতে ব্যাংকের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সরকারের কোষাগারে জমা হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গত জানুয়ারি শেষে ব্যাংকগুলোতে মোট তরল সম্পদ ছিল ৪ লাখ ২৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর হাতে রয়েছে মাত্র ৫ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা, যা বিনিয়োগযোগ্য তহবিল হিসেবে পরিচিত। ব্যাংকগুলো ইচ্ছে করলে এ অর্থ বিনিয়োগ করতে পারত। ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণের পর বাড়তি এ অর্থ ব্যাংকের খাতায় অলস পড়ে রয়েছে। এ হিসাবে মোট তরল সম্পদের মাত্র ১ দশমিক ২১ শতাংশ। সোনালী ব্যাংকের কাছে ব্যাংকগুলোর রক্ষিত হিসাবে রয়েছে ২৬ হাজার ৪১ কোটি টাকা, যা মোট তরল সম্পদের ৬ দশমিক ১৬ শতাংশ।

ব্যাংকগুলো আমানতের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে বাধ্যতামূলক নগদ জমা (সিআরআর) রয়েছে ৭২ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ সিআরআর রয়েছে মোট তরল সম্পদের ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ। বাকি ১০ হাজার ৯৭ কোটি টাকা রয়েছে ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রায়। আর ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা রয়েছে সরকারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ আকারে। অর্থাৎ সরকারের কোষাগারে রয়েছে ব্যাংকগুলোর মোট তরল সম্পদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এর বাইরেও ব্যাংকগুলো সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ রয়েছে, যা বন্ধক রেখে আপৎকালীন নগদ অর্থের সঙ্কট মেটানো হয়েছে। সাধারণত, ব্যাংকগুলোর নগদ অর্থের সঙ্কট দেখা দিলে ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা ট্রেজারি বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ধার নিতে পারে। একে ব্যাংকিং ভাষায় রেপো বলা হয়।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরে ব্যাংক সাধারণ আমানতকারীদের অর্থ দিয়ে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত হচ্ছে না। ঋণ দিলে তার একটি বড় অংশই খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। উপরন্তু তাদের নানা সময়ে নানা ধরনের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সুবিধা দেয়া হচ্ছে। ফলে প্রকৃত উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ছেন ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে। এর ফলে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ কাক্সিক্ষত হারে হচ্ছে না। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জাতীয় অর্থনীতি। সুত্র: নয়া দিগন্ত

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/